এক বন্ধুর মুখে শোনা কিছু ঘটনা, আমি তার মতো করেই লিখছি ।
প্রথমে কাওমী মাদ্রাসার মক্তব বিভাগে অামাকে ভর্তি করা হয়। কিছুদিন পর দেখলাম প্রতিটা হুজুরের বিছানার নিচে অনেকগুলো করে বেত থাকতো। ছাত্ররা দুষ্টুমি করলে বা পড়া দিতে না পারলে হুজুর তাদের প্রচুর প্রহার করতেন। মাঝে মাঝে হুজুররা ওয়াজ করতেন যে, হুজুরদের পেটানোর কারণে ছাত্রদের শরীরে যে দাগ হয় তা কখনো জাহান্নামের অাগুনে পুড়বে না। জাহান্নাম থেকে বাঁচার অাশায় ছাত্ররা মুখ বুজে হুজুরদের এইসব অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করতো।
মক্তব পাস করে হেফজখানায় গেলাম হাফেজ হওয়ার জন্য। অামার মা-বাবার কাছে অনেক গল্প শুনতাম হাফেজদের ব্যাপারে। হাদিসে অাছে, একজন হাফেজ ১০ জন জাহান্নামীকে জান্নাতে নিয়ে যাবে এবং কিয়ামতের দিন হাফেজের মাতা পিতার মাথায় নুরের টুপি পরিয়ে দিবে, যে টুপির অালো সূর্যের অালোর চেয়ে বেশী হবে। অামার বাবা-মা'র একটা অভিপ্রায় ছিলো যে, তাঁদের অামলে যদি তাঁরা জান্নাতে না যেতে পারেন তবে হাফেজ ছেলের উসিলাতে তাঁরা জান্নাতে যাবেন! অামিও একটা হিসেব করতাম কাকে কাকে জান্নাতে নিবো। অনেকে অাবার হাফেজ ছাত্রদেরকে দান খয়রাত করতেন যাতে লিস্টের ১০ জনার মধ্যে থাকতে পারেন।
কাওমী ও হেফজ বিভাগে ছাত্ররা মেঝের উপর পাশাপাশি শুয়ে থাকতো। একদিন রাতে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে দেখি একজন হাফেজ বড় ছাত্র অামার উপর উঠে তার লিংগ দিয়ে অামার পাছার উপর গুতাগুতি করছে। প্রথমে অামি মনে করেছিলাম জ্বীন না কি! কিন্তু না, জিল্লুর রহমান নামে একজন হাফেজ বড় ছাত্র। তারপর তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
চেহারা সুন্দর হওয়ার ফলে অামাকে প্রায়ই যৌন হয়রানির স্বীকার হতে হয়েছিলো। যেদিন হুজুর থাকেন না, সেদিন বড় একজন হাফেজ ছাত্রকে দায়িত্ব দিতেন (যাকে বলা হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত হুজুর) হুজুরকে যে রকম ভয় পেতাম, তেমনি (হুজুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) ছাত্রটিকেও তেমন ভয় পেতাম। এক রাত্রে সেই হাফেজ সাহেব অামার উপর উঠে তার লিংগ দিয়ে অামার পাছার উপর ঘর্ষণ শুরু করে। যখন অামি বুঝতে পারলাম তখন সে অামাকে বল্লো এই চুপ থাকো, নড়া চড়া করবেনা, তারপর তিনি ঘর্ষণে ঘর্ষণে অামার পাছার উপর বীর্যপাত করে মুছে দিয়ে চলে গেলেন।
অার একদিন দাওরা হাদিস পাশ এক হুজুর রাত্রে তার রুমে অামাকে ঘুমাতে বলে এবং রাত্রে এই হুজুরও অামাকে বলৎকার করে।
এভাবে অনেকবার অামাকে হাফেজ ও হুজুররা যৌন অত্যাচার করে। যেহেতু ঐ সময় বলৎকার বিষয়টাকে পাপ মনে করতাম না তাই প্রতিবাদও করতাম না। হাবিব নামে অামার একজন বন্ধু ছিলো। দেখতে সুন্দর হওয়াতে তার উপরও চলতো অামার চেয়ে বেশী যৌন নির্যাতন।
অামার বয়সের কিতাব বিভাগে একজন ছাত্র ছিলো, যার নাম মাহাবুব। সে অামার চেয়েও সুন্দর ছিলো। সে অামাকে জানায়, মাদ্রাসার সবচেয়ে বড় হুজুর তাকে অাংগুর খেতে দিয়ে বলৎকার করে।
এতো বললাম বলাৎকারের কথা (মানে জোর করে কোন পুরুষকে যৌন নির্যাতন)। অার সমকামিতাতো এই ধরনের কাওমী মাদ্রাসাগুলোর নিত্যকার ঘটনা। প্রতিটা রুমে রাত্রে ছেলে-ছেলে মিলে সমকামিতা করতো অার ফজর নামাজের অাগে গোসল করার ধুম পড়ে যেতো। ওইসময় ছাত্র ও হুজুররা বিষয়টিকে কোন পাপকর্ম মনে করতেন না। যদি কাওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে জরিপ করা হয় তাহলে দেখবেন, প্রতিটা ছাত্রই হয় সমকামিতা চর্চা করেছে, অথবা বলাৎকারের শিকার হয়েছে।
এসব ব্যাপারে সচেতন হওয়ার পর যখন দেখি এই সমকামিতা চর্চাকারী হুজুররাই মাথায় একটা রুমাল পেচিয়ে লাঠি উচিয়ে নারী নেতৃত্ব বিরোধী মিছিলে সবার অাগে অাগে স্লোগান দেয় যে, নারী-পুরুষের সহ-শিক্ষা বন্ধ করতে হবে, নারী-পুরুষ একসাথে কাজ করতে পারবে না ইত্যাদি, ইত্যাদি, তখন অামার মেজাজ বিগড়ে যায়।
এই অসভ্য পাশবিক হুজুরদের কাছে পুরুষে-পুরুষে পায়ু ধর্ষণ জায়েজ, কিন্ত নারীদের মুখ খুলে চলাফেরা করা জায়েজ না! ধার্মিক হুজুরদের এইসব হঠকারিতা আজকাল আমাকে খুবই বিব্রত করে। কী করবো না করবো তা ভেবে পাই না।